Dr dipu moni biography of christopher

দীপু মনি

দীপু মনি (জন্ম: ৮ ডিসেম্বর ১৯৬৫)[১] একজন বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ, সাবেক বাংলাদেশ সরকারেরসমাজকল্যাণ মন্ত্রী এবং সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বাংলাদেশের প্রথম নারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রথম নারী শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে পরিচিতি পান। ২০০৮ সাল থেকে তিনি চাঁদপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।[২] ২০২৪ সালে অসহযোগ আন্দোলনের পর রাষ্ট্রপতি জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত করলে তিনি সংসদ সদস্য পদ হারান।[৩]

প্রাথমিক জীবন

জন্ম

দীপু মনি ১৯৬৫ সালের ৮ ডিসেম্বর চাঁদপুর সদর উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের কামরাঙ্গা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।[৪] তার পিতা একুশে পদক বিজয়ী ভাষা আন্দোলন কর্মী ও রাজনীতিবিদ এম.এ ওয়াদুদ। মাতা রহিমা ওয়াদুদ ছিলেন শিক্ষিকা। তার ২ ভাইবোনের মধ্যে একমাত্র ভাই জে আর ওয়াদুদ টিপু একজন চিকিৎসক।[৫]

শিক্ষা

দীপু মনি হলিক্রস কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস এবং বাংলাদেশ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় হতে এলএলবি পড়েন। এমবিবিএস ডিগ্রি লাভের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব পাবলিক হেলথ থেকে এমপিএইচ ডিগ্রি অর্জন করেন।[৬] এছাড়া তিনি লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে মাস্টার্স ডিগ্রি[৭] ও হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমঝোতা ও দ্বন্দ্ব নিরসন এর ওপর একটি কোর্স সম্পন্ন করেন।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

পরিবার

বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের এ্যাডভোকেট তৌফিক নাওয়াজ দীপু মনি'র স্বামী। তিনি আন্তর্জাতিক একটি ল’ফার্মের প্রধান। তিনি ‘আলাপ’ এর একজন শিল্পী। তাদের দু’সন্তান রয়েছে। পুত্র তওকীর রাশাদ নাওয়াজ ও কন্যা তানি দীপাভলী নাওয়াজ।[৮]

কর্মজীবন

দীপু মনি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের একজন আইনজীবী।[৯]

রাজনৈতিক জীবন

দীপু মনি ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে চাঁদপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।[১০] একই সাথে শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভার বাংলাদেশের প্রথম মহিলা পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পান। তিনি ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে চাঁদপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।[১১] একই সাথে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ছিলেন। ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের ২০তম কাউন্সিলে যুগ্মসাধারণ সম্পাদক হিসেবে মনোনীত হন।[১২]

২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে চাঁদপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।[১৩] একই সাথে শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পান।[১৪] তিনি বাংলাদেশের প্রথম নারী শিক্ষামন্ত্রী।[২]

এছাড়া তিনি এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন এর ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপার্সন।[১৫]

২০২৪ সালে অসহযোগ আন্দোলনের পর রাষ্ট্রপতি জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত করলে তিনি সংসদ সদস্য ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রীর পদ হারান।[৩]

সমালোচনা

বিদেশ সফর

পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দীপু মনি তার ঘন ঘন বিদেশ সফরের কারণে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচিত হন। কিছু সংবাদ প্রতিবেদন অনুসারে, তিনি সাড়ে চার বছরে ১৮৭ বার বিদেশ সফর এবং ৬০০ দিন বিদেশ অবস্থান করেছেন।  জবাবে, তিনি বলেছিলেন যে তিনি প্রতিবারই প্রধানমন্ত্রীর সম্মতিতে বিদেশে গেছেন, যিনি প্রতিটি সফরের ভালো-মন্দ বিবেচনা করে তাকে অনুমোদন দিয়েছেন। তিনি রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সাথে ৩৬টি সহ ১১৪টি বিদেশী সফর করেছেন এবং দাবি করেছেন যে তার দ্বিপাক্ষিক সফরের সংখ্যা ১৭টি নয়, ৬২টি ছিল।[১৬]

দুর্নীতির অভিযোগ

চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণকে কেন্দ্র করে দীপু মনির পরিবারের সদস্যদের প্রস্তাবিত জমির দাম কয়েকগুণ বেশি দেখিয়ে ৩৫৯ কোটি টাকা বাড়তি আদায়ে ‘কারসাজির’ অভিযোগে তিনি সংবাদ মাধ্যমে ও সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক সমালোচিত হন। দীপু মনি এই অভিযোগ অস্বীকার করেন।[১৭][১৮][১৯]

গ্রেফতার

১৯ আগস্ট ২০২৪ সালে দীপু মনিকে ঢাকার বারিধারা ডিওএইচএস এলাকা থেকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) গ্রেফতার করে। ২০২৪ সালের অসহযোগ আন্দোলনে সরকারি মদদে হত্যাকাণ্ড ও নাশকতার বিভিন্ন ঘটনায় তার বিরুদ্ধে চাঁদপুর ও ঢাকায় বেশ কয়েকটি মামলা দায়ের করা হয়। গ্রেফতারের পর তাকে মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয় এবং ১৩ আগস্ট ঢাকার মোহাম্মদপুর থানার দায়ের করা একটি হত্যা মামলায় দীপু মনিকে গ্রেফতার দেখানো হয়।[২০]

পুরস্কার ও সম্মাননা

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ